ক্যাটাগরী: থ্রিলার
পর্ব:2
অতপর, জাকুয়া থেকে রওনা হলো পাশের এলাকা "বুডু "তে। অবাকিত চোখে গাছপালা দেখছেন মি.রুট। গাড়িতে পাশের বসে আছেন পিন্জ। কী বলবে তা বলার ভাষা নাই কারোর। অতপর, সময় মতো পৌছুলেন ঘটনাস্থলে! ঘটনাস্থলে পৌছে লাশটাকে একটু ঘাটাঝাটি করলেন রুট। খুবই জঘন্যভাবে হত্যা করা হয়েছে ছেলেটিকে। মাথাটা দেহ থেকে আলাদা করা হয়েছে। মুখটাকে ধারালো কিছু দিয়ে আচরানো হয়েছে। হৃদপিন্ডটাকে বের করে তার উপর এসিড দিয়ে ঝলসানো হয়েছে যা লাশটির অবস্থা দেখে বোঝা যায়। চোখের মনি দুটোকে তুলে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে মার্বেল বসানো হয়েছে। বোঝার উপায় নেই লাশটি আসলে কার। কেননা, লাশটি পাওয়া গেছে এক পরিত্যাক্ত বাড়ি হতে। আশে পাশের এলাকায় খোজঁ নেওয়া হয়েছে, কেউ নিখোজঁ
হয়েছে কীনা।
" লাশটাকে ফরেনসিকে পাঠাও! দেখো কিছু জানতে পারো কিনা!" পিন্জকে কথাটি বলল মি.রুট।
অতপর, রুট ক্রাইম এরিয়াটাকে ভালো ভাবে তল্লাশি শুরু করলেন। যেই বাড়িটাতে খুন হয়েছে সেখানে বহু বছর ধরে কেউ থাকে না। স্থানীয় লোক জন এটাকে কোনো অশরীরী নেকড়ে মানব এর সাথে তুলনা করছেন। তবে, মি.রুট জানেন এটা কোনো মানুষের কাজ। অতপর, প্রতক্ষদর্শী কে ডাকার পর!
" তা আপনি লাশটাকে কীভাবে দেখলেন?" ( পিন্জ)
" স্যার! আমি এইখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। বেলকনির নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় আমার ঘাড়ে পানির মতো কিছু একটা পরে। আতপর, আমি তা হাতে নিয়ে দেখি লাল রঙের রক্তের মতো কিছু টপ টপ করে পড়ছে।এরপর, আমি আশেপাশের লোকজনদের নিয়ে বাড়িতে ঢুকে এই লাঋশটা দেখতে পাই। "( ভদ্রলোক)
" এমনও তো হতে পারে! আপনি খুন করে এখন নিজেই সাধু সাজছেন!" ( পিন্জ)
" এগুলো কী বলেন স্যার। আমরা সাধারন রাখাল মানুষ। এই খুন- টুন আমাদের দ্বারা হবে না।" (ভদ্রলোক)
" ইনভক্টিগেশন চলা পর্যন্ত আপনি এলাকার বাহিরে যাবেননা! এখন এই স্থান থেকে যান"
অতপর, লোকটিকে বিদায় জানিয়ে লাশটাকে ফরেনসিকে পাঠালো পিন্জ। এদিকে রুট ক্রাইম এরিয়াটা ভালো ভাবে সার্চ করে কিছু অদ্ভুত জিনিস পেলেন। একটি মদের বোতল, মাথা আচরানোর চিরুনি, টিস্যুতে থাকা লিপস্টিক। উক্ত জিনিসগুলো সব ফরেনসিকে পাঠালেন মি.রুট।
এদিকে ডক্টর লি তার ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে অদ্ভুত সব তথ্য পেলেন।
এই লাশটা প্রচুর আকারে মদ খেয়েছিলো! যা বোঝাই যাচ্ছে কেননা, রুট লাশের পাশ থেকে মদের বোতল পেয়েছেন।
" তারপর?" প্রশ্ন করলেন রুট!
" লাশের শরীর থেকে একটি অচেনা পারফিউম পাওয়া গেছে। যেটা সাধারনত মেয়েরা ইউস করে। "
" তারমানে, যেই লিপস্টিকটা পেয়েছি সেটা মনে হয় ঐ মেয়ের ছিলো।"
" হুম সেটাই। "
" তারমানে, খুনটা কোনো মেয়ে করেছে? "
" দেখো! রুট, আমি এটা বলছিনা যে কোনো মেয়ে করেছে। হয়তো মেয়েটা তার গার্লফ্রেন্ড ছিলো। আর এইসব খুন কোনো মেয়ের পক্ষে আদৌও সম্ভব বলে আমি মনে করিনা। খুবই নৃসংসতার পরিচয় দেওয়া হয়েছে এইসব খুনগুলোতে !"
" খুন তো হয়েই চলেছে । অথচ, কিলারের কোনো খোজঁ নেই। "
" কে বলেছে কিলারের কোনো খোজঁ নেই? খুনি আমাদের আশে পাশেই রয়েছে কিন্তু আমরা ধরতে পারছি না ।"
" কী বলতে চাচ্ছেন?"
" বলতে চাচ্ছি, খুনি আমাদের এলাকাতেই আছে। কেননা, গতকাল এই শহরের প্রত্যেকটা এলাকা ডাউন করা ছিলো আর তবুও এই খুনটা হয়েছে। তার মানে এটাই দাড়ায়, খুনি আমাদের এলাকাতেই আছেন। "
" এলাকার পাশেই যে জঙ্গল আছে সেটা ভেবে দেখেছেন?"
" হুম। আরে সেটার কথা মাথায় রেখেই, জঙ্গলের একেকটা সেক্টরে ক্যাম্প করা হয়েছিলো। সকালের নিজ দেখেছো?"
" দেখবো কীভাবে বলুন? চারদিকে এতো চাপ।"(রুট)
" হুম!"( ডক্টর লি)
"খুনের প্যাটার্ণ অনুযায়ী আজ রাতে তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও।"( ডক্টর লি)
" কী বলতে চাচ্ছেন? "
" প্যাটার্ন অনুযায়ী আজ খুন হবে না। সেটাই!"
" আপনি বড় ইয়ার্কি স্বভাবের মানুষ। আর, লোক পাননা! আমার মতো লোকের সাথে ইয়ার্কিতে মেতে থাকেন!"
" কী করব ইয়াংম্যান! চারদিকে লাশের গন্ধের ছড়াছড়ি। তোমার সাথেই একটু সুযোগ পাই!"
ডক্টর লি কে বিদায় জানিয়ে রুট তার নিজ বাসাতে চলে আসলেন। আসার আগে পিন্জকে দায়িত্ব দিলেন! আজ রাতে শহরের প্রতিটা এলাকায় যেনো তার টিম রেডি রাখে।
বাসায় ডুকে,
" কী মিস্টার! এতো রাত হলো?"( হুদাইরিন)
" জানোই তো গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এ ছিলাম। "( রুট)
"তা কোনো হদিস পেলে?" ঐ কী যেনো নেকড়েঁ মানব হা হা "
" ডিনার করে নাও। তারপর, তোমার সাথে কথা আছে! "
" কী কথা?"
" আগে ডিনার তারপর বাকি কথা জানু!" রুটের বুকের ভিতর হাত দিয়ে কথাটি বলল হুদাইরিন।
আজ সন্ধা হতে বৃষ্টি হচ্ছে। এখন মধ্যরাত। বৃষ্টির পরিমানটা বেড়েই চলেছে। থামার কোনো নামগন্ধ নেই। মি.রুট তার বেলকনিতে বসে বসে নোট পেডে কী সব লিখছেন আর ভাবছেন। খানিকবাদে, তার স্ত্রী একটা ট্রে তে করে কফি নিয়ে আসলেন।
" আশিক? অনেক রাত হলো। আর তুমি এখানে বসে আছো। তারমানে, আজকেও ঘুমাবে না। এই নাও কফি! রাতটা পার করে দাও।"
কফির মগটা হাতে নিয়ে চুমুক দিতে দিতে বললেন,
" জানো? হুদাইরিন? এই খুনগুলো আমার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগছে। এতটা নৃশংস ভাবে কেউ কাউকে মারে? "
" রাখো তোমার খুন! আজ নিউজ দেখেছো? শহরে একটা মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে!"
" হম শুনলাম। খুব খারাপ লাগলো। আমার ইচ্ছা হয়, এসব ধর্ষকদের এইভাবে শাস্তি দিতে। যেমনটা এই সাইকো কিলার নিরিহ মানুষদের মেরেছে।"
" যাক বাদ দাও এসব কথা। আমি আবার রাত করে এসব শুনতে ভয় লাগে। " কথাটি বলে রুট এর কোলের উপর মাথা দিলো হুদাইরিন।
" আশিক? একটা কথা বলার ছিলো। "
" হুম বলো!"
" হসপিটালের কাজে আমাকে আবার বাহিরে কিছুদিন থাকতে হবে।"
" এইতো সেদিন এলে! আবার যেতে হবে?"
" তুমি চিন্তা কেন করছো? আমি তো ঠিক আছি। আর ডাক্তার হয়েছি মানুষের সেবার করার জন্য। ভিতুর মতো বসে থাকলে চলবে?"
" আচ্ছা। তা কবে যাবে?"
" আগামীকাল সকালে।"
" আচ্ছা! সাবধানে যেও।"
চলবে
0 Comments