গল্প:রহস্যের সন্ধানে
ক্যাটাগরি:ভৌতিক
লেখক:আশিকুর রহমান
শবে মাত্র এসএসসি পাশ করেছি ।কলেজের নতুন জীবন। দিনকাল ভালোই কাটছিলো। এদিকে নতুন কলেজে নতুন কিছু বন্ধুও পেয়েছি। বন্ধুদের নাম না বললেই নয়! সোহান,রাকিব,ফয়সাল। মোটামুটি এই 3 জনের সাথে ভালোই বন্ধুত্ব। একদিন কলেজের অফ পিরিয়ডে,
" কীরে?আশিক! দিনকাল কেমন চলে?" হাসিমুখে আমাকে প্রশ্নটি করলো ফয়সাল ।
"এইতো আছি কোনোমতে। তোর খবর কী?
"এইতো দোস্ত আছি কোনোমতো। পড়াশোনা কেমন যেনো বোরিং লাগতেছে। মন চায় কোথাও ঘুরে আসি।"
কথাটা বলতে না বলতেই সোহান আর রাকিব এসে হাজির।
"কীরে? কী নিয়ে কথা হচ্ছে? আমরাও শুনি" হাসতে হাসতে কথাটি বলল সোহান।
"দোস্ত! সামনে তো গ্রীষ্মের ছুটিতে কলেজ বন্ধ। ভাবতেছি কোথাও ঘুরতে যাবো।"(ফয়সাল)
"তা কোথায় যাবি? ঠিক করেছিস?"(সোহান)
"নারে ভাই। এখনো সিধান্তহীনতায় ভুগছি।"(ফয়সাল)
"আচ্ছা! দোস্ত আমার গ্রামে গেলে কেমন হয়? ওখানে একটা রাজ বাড়িও আছে। শুনেছি অভিশপ্ত বাড়িটা। কোনো অশরীরী টাইপের কিছু আছে ।" সোহানের পেছনে দাড়িয়ে কথাটি বলল রাকিব।
"কী বলিস? এসব আদৌও হয়?"(ফয়সাল)
আমি চিন্তাবিগ্নিত সুরে বললাম," হয় দোস্ত ।রাকিব ঠিক বলছে।"
"তুইও আশিক কী শুরু করলি রাকিবের মতো। রাকিব ভিতু আগে থেকে জানতাম তাই বলে তুইও?" হাসতে হাসতে কথাটি বলল ফয়সাল।
আমি একটু কিচিৎ ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকালাম। অতপর, সোহান বলতে লাগল। " তাহলে চল আমরা রাকিবের গ্রামে যাই। দেখে আসি সেই অভিশপ্ত বাড়ি । হা হা হা"
প্রথমে আমি রাজি না হলেও সকলের জোড়াজুরিতে আমরা সকলেই রাজি হয়ে যাই।
সবাই সিধান্ত নিলাম মার্চের 20 তারিখ রওনা হবো। রাকিবের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের এক পাহাড়ি এলাকায় সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যোগাযোগ ব্যাবস্থা ওতো উন্নত না। তাই সবাই প্রয়োজন মতো সকল জিনিসপত্তর নিয়ে নিলো । সময় করে সবাই যশোর থেকে রওনা হলাম। রওনা দিয়েছিলাম 19 তারিখ সন্ধ্যা 7 টার গাড়িতে আর পৌছুলাম 20 তারিখ সকাল 10 টায় । বাস থেকে নেমে একটি লোকাল বাসে করে 1 ঘন্টার যাত্রা অতপর তার গ্রামের বাড়ি। তবে! রাকিবের গ্রামের বাড়িতে তার পরিবারের কেউ থাকেনা বিধেয় সিধান্ত হলো আমরা ঐ ভুতুরে রাজবাড়িতেই থাকবো। আমি প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হই। কিছূ করার নাই। গনতন্ত্র বলে একটা কথা আছে।
গ্রামের পথ। কোনো যানবাহন নেই । পৌছুতে পৌছুতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। আমি, ফয়সাল, রাকিব,সোহান অবশেষে রাজবাড়ির মূল ফটকে পৌছাই।
ভিতরে দেখা যাচ্ছে, নিবু নিবু করে একটু আলো বাহিরে আসছে।আন্দাজ করে বলা যায় বাতিটা 50 পাওয়ারের হবে। আমরা মূল ফটক খুলতেই ক্যাচ করে একটা শব্দ হলো। চারদিকে নিঃস্তব্ধ পরিবেশ। আশেপাশে লোকালয় নেই। দূর থেকে মাগরিবের আযানের আওয়াজ আসছে। বাড়ির আশে পাশে জঙ্গল বিধেয় বাদুড়ের আনা-গোনো শুরু হয়েছে। আমরা আস্তে আস্তে বাড়িতে প্রবেশ করতে লাগলাম। হাতে একটা টর্চ লাইট ছাড়া আর কিছুই না। ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্তর। আমরা বাড়ির মূল দরজায় আসতেই,
" কে? ওখানে! কারা এখানে? কী করছে এখানে?"
একটা কর্কষ ভাষায় পেছন থেচে শব্দ শুনলাম । ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই দেখি এক বয়স্ক লোক হাতে একটি হারিকিন নিয়ে দাড়িয়ে আছে। গায়ে চাদরের আবরন। বুজতে পারলাম না এই গরমের দিনে কেন গায়ে চাদর দেওয়া ।
" আসলে আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি। কলেজের বন্ধে এখানে ঘুরতে এসেছি।"
"ওহ তাহলে আপনারাই তারা? বড় বাবু আমাদের সব বলেছেন।"
" মানে? কোন বড় বাবু?"(ফয়সাল)
" আপনারা সালাম সাহেবের আত্মীয় না?"
আমি কিছূ বলতে যাবো এমন সময় ফয়সালা হাতে চিমটি কেটে বলল,
"জ্বী।আমরা সালাম সাহেবের আত্মীয়। এখানে ঘুরতে এসেছি। উনি গত মাসে এখানে আসতে বলেছেন।"
"আচ্ছা। আপনারা ভিতরে আসুন। আমি আপনাদের খাবারের ব্যাবস্থা করছি।"
"আচ্ছা। ধন্যবাদ"
ভিতরে প্রবেশ করতেই একটু অবাক হলাম। এতো বছরের পুরোনো বাড়ি কিন্তূ আজও মনে হয় তরতাজা। মনে হয় জমিদার সাহেব আজও এখানে আছেন।
বয়স্ক লোকটিকে বললাম, আমাদের থাকার রুম কোনটা? তিনি বললেন, ঐযে উপরের রুমগুলো দেখতে পাচ্ছেন? ওগুলো।
আমি যেহেতু একটু ভয় পাই তাই আমি আর সোহান এক ঘরে থাকবো। আর ফয়সাল আর রাকিব আলাদা ঘরে।
রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে একটু অবাক হলাম। টেবিলে হরেক রকমের খাবার সাজানো । মনে হচ্ছে আমরা আসবো তা উনি আগে থেকে জানতেন। যাই হোক! আমাদের মনে প্রথমে সন্দেহ জাগলেও পরে তা খাবার দেখে ঝেরে ফেলি। ফয়সাল তো বেশ আরাম করে খাচ্ছে। আমিও খাবার মুখে দিতে এক অন্যরকম অনুভুতি পেলাম।
"করিম সাহেব?(বয়স্ক লোকটির নাম) এতো খাবার কোথায় পেলেন? এরকম স্বাদ কখনো পাইনি।" বললাম আমি।
লোকটি হেসে বলল," আমার গিন্নি রান্না করেছে। আজ থেকে 12 বছর আগে সে মারা যায় ।
খাবার খেতে খেতে কাশি উঠল আমার।
"কী কী কীহ? কী বললেন?"
" আজ্ঞে মহাসয় মজা করলাম। আমার গিন্নি খুব ভালো রান্না করেন। পাড়ায়ও বেশ পরিচিত। তাই বললাম।"
" ওহ! আপনি তো আমাকে ভয় পাইয়ে দিলেন। এমনিতেই এই পুরানো জমিদার বাড়ি
তার উপর এসব কথা। আমার একদম ভালো লাগে না"
সবাই আমার কথা শুনে হেসে উঠল ।
খাবার খাওয়া শেষ হয়ে সবাই যার যার রুমে গেলাম। নেটোয়ার্কও ভালো নেই যে সুমাইয়াকেও কল দিবো। হঠাৎ মাথায় আসল আমাদের ধোকাবাজির কথা! তাই তৎখনাৎ ফয়সালের ঘরে ঢুকলাম।
" কীরে আশিক? কিছূ লাগবে?"
" নারে দোস্ত! তবে একটা কথা বলতে আসছিলাম।"
" কী বল?"
" আমরা যে সন্ধ্যায় মিথ্যে কথা বললাম। কাজটি কী করি উচিত হয়েছে?"
" আরেহ! টেনশন করিস নাহ। জানতে পারলে চলে যাবো সমস্যা কী?"
আমি মন খারাপ করে রুমে এসে পড়লাম। সারাদিন জার্নি করায় শরীরটা অনেক টায়ার্ড ছিলো। তাই রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি ফয়সাল নিখোজঁ। সকাল সকাল এ ধরনের নিউজ শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
আমি সোহানকে বললাম,
"আরে। ঘুরতে গেছে হয়তো । চিন্তা করিস না ফিরে আসবে।"
আমরা সারাদিন ফয়সালকে খুজলাম কিন্তু পেলাম না। এদিকে করিম চাচাও কিছু বলছে না। তার চোখে বিষন্নতার ছাপ। মনে হচ্ছে কিছূ লুকাচ্ছে। আমরা চিন্তায় পড়ে গেলাম। রাকিব আর সোহানকে বললাম,
" আমরা এসেছিলাম মজা করতে আর সে আমাদের সাথে মজা করছে? আমার এই লোকটাচে সন্দেহ হচ্ছে। নিশ্চই কিছূ লুকাচ্ছে।"
" আমারো তাই মনে হচ্ছে রে। নিশ্চই এই বাড়িতে কিছু আছে। না হলে, ঐ বয়স্ক লোকটিকে দেখেছিস! কী করলো?"
"দোস্ত? আমি আজ রাতে খাবারের পর ঐ লোকের পিছু নিবো। "
" না দোস্ত এই কাজ করিস না। যদি তোর কোনো ক্ষতি হয়ে যায়?" বলল সোহান
" আচ্ছা দেখা যাবে!"
রাতের খাবারের সময় লোকটি আমাদের ডেকে নিয়ে গেলো। রাতের বেলা রাকিব খুবই অল্প খেলো। ওর চোখে কেমন জানি সন্দেহের ছাপ। খাবারের পর যখন করিম চাচা যেতে লাগলো তখন রাকিব ও পিছে পিছে ছুটল।
আমি আর সোহান রাকিবের কথা চিন্তা করে ওদের পিছু পিছূ ছুটতে লাগলাম। লোকটা জমিদার বাড়ির মূল করিডোর ধরে হাটতে লাগলেন।কেনো জানি তার সাথে হেটে আমরা পেরে উঠছি না। আর, আশচর্যের বিষয় তিনি সোজা হাটছেন একটা রোবটের মতো । আমরা ছেলেরা বা মেয়েরা যেভাবে হাটি তিনি তার কোনভাবেই হাটছেন না। উপর তলার করিডোর শেষ করে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলেন। আমরাও তার পিছূ করছি নিঃশব্দে। কিন্তু এটা কী হলো?
সিড়ির কাছে আসতেই দেখি লোকটি উধাও! এটা কীভাবে সম্ভব? সিড়ির প্রত্যেক পার্টে 50 এর মতো ধাপ। এতো কম সময়ি কীভাবে পাড় করলেন? আমরা বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত।
ভয়ার্ত মুখ নিয়ে আমরা আমাদের রুমে আসছিলাম । তখন হঠাৎ, খুবই করুন শব্দে আমি একটা মেয়ের কান্নার আওয়াজ।
" দোস্ত থাম! একটু দাড়া।" হঠাৎ করে খুবই চুপি সারে বললাম।
" কেন কী হয়েছে?" বলল সোহান।
" তুই কোনো শব্দ শুনতে পাচ্ছিস না?
"কৌ? নাতো"
"চুপ! কথা বলিস না"
অতপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমি একটি মেয়ের করুন সুরে কান্নার আওয়াজ পাচ্ছি করিডোরের পাশে থাকা রুম থেকে।
" কীরে? কিছু শুনলি?"পেছনে তাকিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে বললাম আমি। সোহান আর রাকিবের চোখে ভয়ার্ত এক ছাপ। আমি শব্দের উৎস খোজার চেষ্টা করলাম আসলে শব্দটা কোথা থেকে আসছে। গুটি গুটি পায়ে এগোতে লাগলাম । লাল রঙের এক দরজার কাছে আসতেই শব্দটা স্প্ষট হতে লাগল। আমি পেছন ফিরে তাকিয়ে সোহানকে ফিসফিসিয়ে বললাম,
"কীরে? দরজা খুলবো?"
"খুল দোস্ত । আজকে জানতেই হবে দরজার আড়ালে কী রয়েছে।
আমি যেই দরজাটা ধাক্কা দিতে যাবো ওমনি পেছন থেকে আবার কর্কষ গলায় ও রাগ্বানিত স্বরে,
"আপনারা এখানে কী করছেন? জানেননা এখানকার রাতের পরিবেশ ভালো না।" চোখ রাঙিয়ে কথাটি বলল করিম চাচা।
"নাহ। আসলে বাহিরে একটু বাতাস থেকে এসেছিলাম। হঠাৎ, এই রুম থেকে একটি মেয়ের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। তাই চেক করতে আসলাম।" হাসিমাখা সুরে বললাম আমি।
"নাহ। এখানে কোনো মেয়ে থাকে না। আপনাদের মনের ভুল। চলে যান"
আমরা কিছু না বলে চলে আসলাম আমাদের রুমে। ঐদিন আমরা 3 জন একসাথে এক রুমে ছিলাম।
"দোস্ত? ঐ করিম আমাদের কাছ থেকে কিছুতো লুকাচ্ছে!" বেশ রাগ্বানিত স্বরে বলল সোহান।
আমিও তার কথায় শায় দিলাম। সাথে বললাম, এখানকার পরিবেশ ঠিক সুবিধার মনে হচ্ছে না। আমরা কাল সকালে রওনা দিবো শহরের উদ্দেশ্যে। তবে জাওওয়ার আগে আজ রাতে আমাকে ঐ দরজার আড়ালে থাকা রহস্য জানতেই হবে। আমার কথা মতো সবাই রাজি হলো মানে রাকিব আর সোহান। কেননা, করিম চাচা বলেছে এখানে কোনো মেয়ে থাকে না। তাহলে ঐ কান্নার আওয়াজ আমি শুনলে একটা কথা ছিলো বাট আমরা সবাই শুনলাম কিভাবে?
রাত 12 টার কাছাকাছি। সবাই তখন জাগ্রত। হাতে একটা টর্চ, ম্যাচ বাক্স আর মোবাইল ফোনটা। শুনেছি, ম্যাচ বাক্স কাছে থাকলে নাকি অশরীরী কিছু ভীড় করে না।
চারদিকে এক নিঃস্ত্বব্ধ পরিবেশ।দূরে কোথাও শেয়াল ডাকছে। ঝি ঝি পোকা গুলো ডাকাডাকি করছে না।মাঝে মধ্যে অদ্ভুত রকমের আওয়াজ কানে ভেসে আসছে।
আমি সোহান আর রাকিব দরজাটা আস্তে করে ফাক করলাম। অতপর, বাহিরে বের হলাম। ঘুটঘুটে অন্ধচার চারদিকে। জনমানবের কোনো চিহ্নমাত্র নেই। যাইহোক, আমরা আবার সেই করিডোরের লাব কালার চিহ্নিত দরজার কাছে আসললাম।
"দোস্ত? লাইটটা জ্বালা! আমি দরজাটা খুলছি"
চুপিসারে বললাম কথাটি সোহানকে আর রাকিবকে।
দেখলাম দরজায় একটা ছিটকিনি দেওয়া আর ওখানে একটা লালা সুতা দিয়ে বাধা কিছু একটা । আমি সুতার প্যাচটা খুললাম। অতপর, দরজাটা আস্তে আস্তে খুললাম। কিশ্চিৎ, একটু শব্দ হলো তবে তা আমাদের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
আমি আস্তে আস্তে দরজাটা খুলতেই এক দমকা বাতাস বাহিরে বের হলো । শরীরটা কেনো জানি কাটা দিয়ে উঠলো।
আমরা সকলে ভেতরে প্রবেশ করলাম। চারদিকে ভ্যাপসা রকমের গন্ধ। বোজা যাচ্ছিলো না গন্ধটা ঠিক কীসের।
ভিতরে ডুকেই দরজা বন্ধ করলাম আর লাইট অন করলাম। লাইট অন করতেই আমার বুকে একটা মৃদু হার্ট এটাক হলো।
রুমের চেয়ারে একটি মেয়ের লাশ বসে আছে। চোখগুলো নেই তার। কী এক ভয়ার্ত অবস্থা । মেয়েটি পেছনে একটি ছেলের লাশ পরে আছে কাছে যেতেই দেখি ফয়সালের লাশ। খুবই অবাক যেমন হয়েছি তেমনি বুক ফেটে কান্না আসছিলো। কিন্তু; কিচ্ছু করার নেই।
আমাদের প্রচুর রাগ হতে লাগল করিম চাচার উপর। তবে! তার কথা বলতে না বলতেই তিনি হাজির।
" তার মানে তোরা সব জেনে গেছিস? আজ তোদের রক্ষা নেই" কর্কষ ভাষায় বলল করিম।
"সালা কুত্তার বাচ্চা! তোর আজ রক্ষা নাই। তুই আমার বন্ধুকে মেরেছিস" করিমের কলার ধরে সোহান কথাটি বলল আর চটাস চটাস করে থাপরাতে লাগল।হঠাৎ করেই করিম চাচা সোহানকে জোড়ে ধাক্কা দিলো। এক ধাক্কাতেই করিডোরের বাহিরে গিয়ে পড়লো। বুঝলাম না বয়স্ক লোকটার গায়ে এতো শক্তি আসলো কোথা থেকে। তবে, আমরা সবাই অবাক হলাভ যখন তার মুখ থেকে বড় বড় দাত সে বের করতে লাগল। আমাদের আর বুডযে বাকি রইলো না জিনিসটা কি। আমি করিম চাচাকে জোড়ে এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই। তারপর রাকিব আর সোহানকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে তাকে ঘরবন্দি করি। অতপর, আমরা দ্রুত আমাদের ব্যাগ নিয়ে জমিদার বাড়ির বাহিরে বের হই কিন্তূ রাস্তায় হয়তো আমাদের জন্য মৃত্যু অপেক্ষা করছে। মূল ফটকে দাড়িয়ে করিম চাচা।
" তোরা বেচে ফিরতে পারবি না। এখানে যারা আসে তারা নিজের ইচ্ছায় আসে কিন্তূ যায় আমার ইচ্ছায়। চিন্তা করিস না আজ পর্যন্ত কাউকে যেতে দেইনি।"
কর্কষ গলায় বলল করিম।
আমাদের কাছে আসছে সে আমরা না পারছি ভিতরে ঢুকতে না পারছি কিছূ করতে এমন সময় সাদা কাপড় পড়া এক মেয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়।
ভেবেছিলাম একজনের হাতে মরবো কিন্তূ এতো দেখি দু জন। মেয়েটি আমার কাছে এসে বলল,
।"ভয় পেয়ো না। আমাকে তুমি ঐ যাদুর দরছা থেকে বের করেছো। ঐ করিম তার বউয়ের যাদু বিদ্যার জন্য আমাকে বন্দি করে রেখেছে। ওর বউ ছিলো পিশাচ ডায়নি আর ও সেরকম । এই বাড়ির সালাম সাহেবকে ও মেরেছে তার বউয়ের যাদু বিদ্যার জন্য । এই জমিদার পুরিটাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। কিন্তু, আমি ওর বউকে মেরে ফেলি। যার পর থেকে করিম আমার আত্মাকে এখানে বন্দি করেছে। প্রতিবছর এখানে অনেক মানুষ মারা যায় শুধু ওর কারনে। তোমার ভাগ্য ভালো যে আগে থেকে সব বুঝে গেছো।"
মেয়েটি কথাটি বলতে না বলতেই করিম তার দাত দিয়ে আমাকে কামড় বসাতে আসল। আমি এক চিৎকার দিতেই ঘুম থেকে উঠে গেলাম। উঠে দেখা আমি হাসপাতালের বেডে ।দু-পাশে সোহান আর রাকিব শুয়ে আছে। নার্সকে জিজ্ঞাস করলাম আমরা এখানে কীভাবে?
" আপনাদের 3 জনকে এক ভদ্রলোক ঐ পুরাতন জমিদার বাড়ির ফটকে অজ্ঞান অবস্থায় পেয়েছেন। তারপর এখানে এনেছেন। আমি দরজার দিকে তাকাতেই দেখি, এটা করিম চাচা। আমার কাছে উনি আসতে লাগল আর আমার ঘাম ঝরতে লাগল। হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দিলো। আর; তাতে লেখা ছিলো,
" এবারের মতো বেচে গেলি"
1 বছর পর,
"এইটাই তো জমিদার বাড়ি। চল বেতরে ঢোকা যাক।" জিসান কথাটি বলতে না বলতেই,
"আজ্ঞে, মহাশয়! কে? সালাম সাহেব পাঠিয়েছেন কী?"
"জ্বী!......"
অতপর;
অসমাপ্ত
0 Comments