গল্প: হিউসেপ
ক্যাটাগরী:গোয়েন্দা
লেখক: আশিকুর রহমান
পর্ব:৪
"জানিনা কীসের কাগজ। তবে কীছু একটা লেখা আছে!"(পিন্জ)
"কোথায়? দেখি?"(ব্রডি)
অবশেষে খুব সাবধানের সহিত কাগজটি খুললো ব্রডি। কেননা, ডক্টর লি বলেছেন সাইকো কিলারটার শরীরে "হিউসেপ" ভাইরাস রয়েছে যা খুব সহজে এক জন হতে আরেকজনের শরীরে ছড়াতে পারে। তাই তাদের ধারনা কাগজটিতে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে। কাগজটি খোলার পর আবার সেই আগের মতো লেখা,
"কী ব্রডি? কেমন আছো তুমি? আশা করি ভালো আছো।তা এবারের খুনটা কেমন লাগলো তোমার? ভালো লাগেনি তাহলে আজ রাতের খুনটা আরো মন মতো করব। তুমি হয়তো ভাবছো আমি লোকটাকে কেনো মারলাম। আসলে, খুন করার সময় লোকটা প্রচূর চেচামেচিঁ করছিলো। তাই আমি তাকে খুব আদরের সহিত মেরে ফেললাম। ভালো লাগেনি বুঝি তোমার কাছে? যাক বাদ দাও ।আজ রাতের খুনটা আরো ভালো করে করবো। আর আজকের টাও বলে দেই! আজ রাতে অস্টিন এ খুনটা করব। বসন্তের সময় এখন। আর ঐদিকে বেশ ভালোই হাওয়া বইছে। আহা, রাতের বেলা এমন সুন্দর নিস্তব্দ্ধ পরিবেশে খুন! মজাটাই আলাদা। তৈরি থেকো! ঠিক রাত 12 টায়"
চিঠিটা ব্রডি পড়তে পড়তে ব্রডির কপাল থেকে এক ফোটাঁ ঘাম কাগজটার উপড়ে পড়ল। রুমে এসি চলছে তার মাঝেও সে ঘামছে।
"ব্রডি? তুমি ঠিক আছো?"(পিন্জ)
"হুম! আমাদের আজকের ক্লু পেয়ে গেছি! এখন চলো ফরেনসিকে যেতে হবে।"(ব্রডি)
"হুম চলো!"
অবশেষে, ব্রডি আর পিন্জ ডক্টর লি এর কাছে গেলেন।
"হে ইয়াংম্যান! কী অবস্থা? সব ঠিক ঠাক তো?"(ডক্টর)
"না! আজকে আবার হুমকি পেয়েছি।"
"আচ্ছা! কৌ দেখি"
"এই নিন!"
ডক্টর লি প্রথমে কাগজটার উপরে একটা স্পে করলেন। হয়ত ভাইরাস থেকে জীবানু মক্ত করার জন্য। তারপর, তিনি কাগজটিকে একটি লেজার লাইটের সাহায্যে কিছূ একটা করলেন। অতপর, তিনি পড়তে লাগলেন। তবে, তিনি যেনো স্বাভাবিকভাবেই এটা পড়লেন। কোনো ভয়ের নামগন্ধ নেই। ডক্টর লি এর পড়ার ফাকেঁ ব্রডি ল্যাবটি ভালো ভাবে সার্চ করতে লাগল। হঠাৎ একটা জিনিস দেখে চমকে উঠল। পিসি টেবিলের নিচে কতগুলো সাদা খামের মতো। যেমনটা ব্রডি আগেও দেখেছে। ব্রডি কাছে যেতে লাগল আর এমন সময়,
"ব্রডি ওদিকে যেও না। এদিকে এসো!" ( ডক্টর লি)
ব্রডি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ডক্ট লি তাকে ডাকছে। অতপর, সে বিষয়টাকে মাথায় না এনে ডক্টর লি এর কাছে গেলো।
"ব্রডি? এই দেখো! আমি এই লাশ দূটোর কাছ থেকে সেইম ভাইরাস পেয়েছি। জানিনা এই ভাইরাস আর কত জনের মধ্যে রয়েছে। তবে, সাইকো কিলারটা বেশ চালাক।"(ডক্টর লি)
"হুম সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। তবে, আজকে আমাদের তাকে ধরতেই হবে। বজ্জাতটা প্রতিবার আমাদের ধোকা দিচ্ছে আর হাত থেকে পালাচ্ছে!"
"আচ্ছা ব্রডি? এমন করলে কেমন হয়? আজকে অস্টিন এর প্রতিটি বাসায় বিশেষ করে মেয়েদের বাসায় আগ থেকে আমাদের ফোর্স রাখবো।"
"হুম। দারুণ আইডিয়া!"(ব্রডি)
"তা করতে যাবে কেনো?"(ডক্টর লি)
"নাহ। এটা করব। আপনি আমাদের বাধা দিতে আসবেন না। আপনার কাজ ফরেনসিক। অনুসন্ধান নয়!"(ব্রডি)
"হুম। যা তোমাদের ইচ্ছা। " তাচ্ছিলোর সুরে কথাটি বলল ডক্টর লি।
অতপর, ব্রডি আর পিন্জ ফরেনসিক ল্যাব থেকে নিজেদের শরীর বায়ো এসিড দিয়ে ধুয়ে জীবানু মুক্ত করল।
*সন্ধার কাছাকাছি। ব্রডি আপনমনে তার করিডরে দাড়িয়ে ভাবছে!" আজ রাতেও কী আরেকটি নিরীহ মেয়ের প্রাণ যাবে? আগের দুটি খুন আমার অবহেলার কারনে হয়েছে। তবে কী আজকের টাও? আমি কীভাবে নিজেকে তাদের কাছ থেকে ক্ষমা করব?" এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ পিন্জের ফোন!
"হ্যালো ব্রডি?"
"হুম পিন্জ। বলো!"
"রেডি হয়েছো?"
"জ্বী। "
"তাহলে জলদি আমাদের অফিসে আসো। টিম রেডি। এখন প্লান করার বাকি।"
"আচ্ছা।" ফোনটি রেখে দিয়ে ব্রডি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল আর মনে মনে বলল, আজকে খেলা হবে।
(অফিসে পৌছতে প্রায় আধ ঘন্টা লাগল। অতপর,)
"পিন্জ! প্লানটা বলো!"
"ওয়াও তুমি এতো তাড়াতাড়ি এসেছো। হুম শোনো!" পিন্জ একটি টেবিলের উপর বড় একটা ম্যাপ বের করে রাখল।
"ব্রডি এবং সবাই দেখো! এটা হচ্ছে আমাদের অস্টিন শহরের ম্যাপ। অস্টিনের স্ট্রিটে টোটাল 17টি বাংলো আছে। আর প্রত্যেকটি বাড়িতেই তরুনী, মাঝ বয়সি মেয়ে আছে আর সাইকো কিলারটার টার্গেটাই কিন্তু হবে এই মেয়েদের যেকোনো একজনকে। "
"হুম বুঝলাম। তারপর?"
"এই দেখো! অস্টিনেথ স্ট্রিটে ডোকার টোটাল 2 টি গেইট। একটি উত্তর আরেকটি পশ্চিম। আমরা এই দুইটি জায়গাতেই আমাদের ফোর্স অলরেডি লাগিয়েছি । বাকি থাকলো বাংলা। এখানে 15 জন সদস্য। আর বাকি দু-জন হলাম আমরা। তুমি একটি বাংলোয় থাকবে আর আমি একটিতে। "
"আচ্ছা। আর কিছূ ?"
"না! আপাতত এই টাই করি। আজকের মধ্যেই আমাদের এই সাইকো কিলারটাকে ধরতে হবে।"
অতপর, সকলে বাংলোর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সকলে সবার জায়গায় অবস্থান নিলো। এখন শুধু রাত 12 টা বাজার অপেক্ষা। ব্রডি একটি মেয়ের বাসায় আছে যেখানে সে শুধু একাই থাকে।
"স্যার! আমার অনেক ভয় করছে!"(মেয়ে)
"ভয় পাবেননা। আমি আছি তো!"(ব্রডি)
"খুনিটা এতো নিষ্ঠুর কেনো? কত নির্মম ভাবে মেয়েদের হত্যা করে।"
"হুম। আসলেই নিষ্ঠুর। সেই জন্যেই তো আমরা ধরার চেষ্টা করছি!"
রাত 12:30। কোথাও কোনো সারাশব্দ নেই
বেশখানিকবাদে
হঠাৎ, ওয়াকিটকিতে পিন্জের ভয়েস!
"হ্যালো ব্রডি? শুনতে পাচ্ছো আমাকে? হ্যালো ব্রডি ? রিপ্লাই মি। হ্যালো চেক?"
ওপাশ থেকে এক তরুনীর আত্মচিৎকার,
"প্লিজ বাচাওঁ আমাকে!"
চলবে!
0 Comments