গল্প: হিউসেপ


ক্যাটাগরী: থ্রিলার+ গোয়েন্দা
লেখক: আশিকুর রহমান

পর্ব:2

কথাটি বলে ডক্টর লি বাহিরে চলে গেলেন। ব্রডি তার কাজে আবার মন দিলো। তবে, এবার মাস্ক পড়ে আছে সে। ব্রডি ওয়াস রুমে তেমন কিছু পেলো না। অতপর, কিচেন রুমে গেলো। আর, সেখানেও আগের মতো একটা খাম। খামটি খোলার সাথে সাথেই ব্রডি একটা শক খেলো! খামটিতে ঠিক লেখা ছিলো,

"কী ব্রডি? ভয় পেলে? আমি জানি তুমি কিচেন রুমে আসবে। তবে হ্যা! এবার ভয় পাওয়ার দরকার নেই।কারন এবাথ আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না মানে তোমাকে কোনো ভয়ও দেখাবো না। তবে তোমাকে বলে রাখতে চাই। আমার এই খুনের  সিরিয়াল চলতে থাকবে। আরেকটা মজার বিষয় কী জানো? সবাই মরলেও তোমাকে আমি কিছু করবো না। কারন তোমাকে যে আমার প্রয়োজন। আমাকে খুজতে হবে না? মনোযোগ দিয়ে আমার এবারের কথাটি শুনো!  আজ রাত 12 টায় হ্যা ঠিক শুনেছো আজ রাত 12 টায় আরেকটি মেয়ের খুন করবো আমি। এই  শহরেরই। তুমি পারলে আমাকে খুজোঁ। কী খুজতে কষ্ট হবে? তাহলে লোকেশনটাও বলে দেই? শোনো জর্জ টাউনের যেকোনো একটা ফ্লাটে আমি খুন করবো। তুমি পারলে আমাকে ধরো!

ইতি ,
#Dx"

চিঠিটা পড়ে ব্রডির মাথায় যেনো বাজ পড়ল। কী করবে বুঝতে পারছে না। তবে যে করে হোক ব্রডিকে ঐ মেয়েটাকে বাচাতে হবে। যাথ আজকে খুন হওয়ার পালা।

"হ্যালো পিন্জ? তুমি কোথায়?"(ব্রডি)

"কেনো? আমি অফিসেই আছি"

"আচ্ছা তুমি থাকো আমি আসতেছি।"

"আচ্ছা!"

বেশখানিকবাদে, ব্রডি হতদন্ত হয়ে পিন্জের অফিসে ডুকলো। তার সারা শরীর ঘামে ভিজে আছে। চোখে কেমঁ ভয়ার্ত এক দৃশ্য।

"কী হয়েছে? ব্রডি? তোমার কোনো সমস্যা?"(পিন্জ)

"মারাত্মক সমস্যা!" হাপাতে হাপাতে বলল ব্রডি।

"কী হয়েছে?"

"এই চিঠিটা পড়ো!"

অতপর, পিন্জ চিঠিটা পড়ে ধপ করে তার চেয়ারে বসে  পড়লেন।  পিন্জের মুখে কোনো শব্দ নেই।

"কী হয়েছে পিন্জ?"
" আমাদের যতদ্রুত সম্ভব ব্রডি ঐ মেয়েকে বাচাঁতে হবে!"
" কিন্তু খুজবো কীভাবে ? ঐ মেয়েকে?"

"যেহেতু সে আমাদের এডরেস দিয়েছে। সুতরাং, আমরা তাকে পেয়ে যাবো। "

ব্রডি আর পিন্জ রাত 10 টা থেকে জর্জটাউন এলাকায় ছদ্মবেশে দাড়িয়ে আছে।

চারদিকে শুনশান নিরবতা ।কোথাও কোনো শব্দ নেই। আশেপাশে কিছূ দূর পর্যন্ত লাইট জ্বলছে নিবু নিবু করে। দু-একটা গাড়ি আধ ঘন্টা পর পর যাতায়ত করছে। মনে হচ্ছে একটা প্যাটার্ন অনুযায়ি চলছে তারা। দূর থেকে পেচারঁ আওয়াজ ভেসে আসছে। হাল্কা বাতাস বয়ে যাচ্ছে।

"পিন্জ? কিলারটা কি আমাদের ধোকাঁ দিচ্ছে।"

"সঠিক বলতে পারছি না। অপেক্ষা করতে হবে!"

"আচ্ছা!"

"ব্রডি? তুমি ঐদিকটায় দেখো আর আমি এই দিকটায়!"

"আচ্ছা তবে তাই করি।  যেহেতু সময় ঘনিয়ে এসেছে।"

ব্রডি উত্তদিকটায় গেলো আর পিন্জ দক্ষিণ দিকটায়। ব্রডি গুটি গুটি পায়ে হেটে চলেছে বাংলোগুলোর চিপাচাপা গলিতে। খুবই নিঃশব্দ পায়ে  হেটে চলেছে। যেনো একটা কাক পক্ষিও টের পায়না। হঠাৎ, ব্রডির পেছনে একটা ধুপ করে শব্দ হলো।

"কে?" কে ওখানে?" বলল ব্রডি

কোনো শব্দ নেই। ব্রডি আবার হেটেঁ চলেছে। আবারো ধুপ করে শব্দ।

"কে? পিন্জ? তুমি নাকি! "

আবারো কোনো শব্দ নেই। ব্রডি কিছূটা ভয় পেলো। এটা কি তাহলে সেই কিলারটা? ব্রডি আবার হাটতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ পেছন থেকে ব্রডির মাথায় বারি পড়ল।

"আহ!"

একটা শব্দ করে ব্রডি নিচে পড়ে গেল । প্রায় 6 ঘন্টা পর ব্রডি নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করল। পাশে দাড়িয়ে আছে পিন্জ, ডক্টর লি আর তার টিম।

"আমি এখানে কিভাবে?" প্রশ্ন করল ব্রডি।

"তোমার কিছুই মনে নেই?" (ডক্টর লি )

" নাহ তো!"

" কি হয়েছিলো তুমি জানো?"

"কী হয়েছে?কোনো দুঃসংবাদ!"

"হুম আরেকটি খুন!"

"কীহ? কী বলেন?"

"হুম ঠিক শুনেছো!"

"কিভাবে? আমার যতটুকু মনে পড়ে! কেঊ আমার মাথায় একটা আঘাত করল আর আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লাম।"

"ওহ ! তুমি সুস্হ হয়ে ল্যাবে আসো। তারপর বলছি!"

"পিন্জ? কী হয়েছিলো?"

"তুমি যাওয়ার পর  প্রায় কয়েকঘন্টা কেটে যায়। তোমার কোনো খোজঁ নেই। ফোন করেও পাচ্ছিলাম না তোমাকে। অতপর, তোমাকে খুজতে বের হই। আর শেষমেষ পেলেও অনেক দেরী হয়ে যায়। তোমাকে পাওয়ার পর জানতে পারি একটি মেয়ি খুন হয়েছে।"( পিন্জ)

" ব্রডি। তুমি আমর ল্যাবে এসো। তোমাকে কিছূ বিশেষ বিষয় জানাবো"(ডক্টর লি)

অতপর, ব্রডি হসপিটাল থেকে রিজাইন নিয়ে  ডক্টর লি এর ল্যাবে যায়।

" ব্রডি তুমি এসেছো?"

"জ্বী। কী বিশেষ তথ্য বলার কথা?"

"এই দেখো। নতুন লাশটা। এর শরীরে আমি এক বিশেস ধরনের ভাইরাস পেয়েছি!"

"কেমন ভাইরাস?"

"হিউসেপ!"

"হিউসেপ? এটা আবার কেমন নাম?"

" এটা এমন এক ভাইরাস! যেটা মানুষকে দুইটা চরিত্রে ভাগ করে। এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে অন্য চরিত্র দান করে।"

" তাহলে আপনি কী বলতে চাচ্ছেন? এটা কোনো সাইকো কিলার না?"

" নাহ বলতে পারো আপাতত। কেননা, যে এই মেয়েকে  হত্যা করেছে সে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাইকো হয়ে যায়। "

"তাহলে এখন কী করতে হবে  আমাকে?"

"সেটা পরে বলছি! তবে আমি অবাক!"

"কেন?"

"কিলারটা চরম লেভেলের সাইকো। "

"কিভাবে বুঝলেন?"

"এইযে নতুন লাশটা দেখো। মেয়েটার গলার রগগুলো ব্লেড দিয়ে কেটেছে। মারার আগে মেয়েটর হাত, পা বাধেঁ।  তারপর, হাত দুটোতে সালফিউরিক এসিড ঢেলে দেয়। যাতে তার সাথে ধ্বস্তাধস্তা না হয়। তারপর মেয়েটার চুলগুলোতে আগুন ধরানো হয়। যখন আগুনটা মাথার কাছে আসে তখন তাতে পেট্রল ঢালা হয় ।"

" আপনি এতো শিউর কীভাবে?"

"ফরেনসিক রিপোর্ট এটাই বলছে ভাই! আরো দেখো। মেয়েটার ব্রেনকে পোড়ানো হয়। হাতের রগ গুলো কাটা হয়। বুকটার উপরের অংশে প্রচুর ছুড়ি দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। মেয়েটার গোপন অংশে সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে খোচানো হয়। এর থেকে প্রমানিত হয়  এটা চরম লেভেলের সাইকো কোনো কিলারের কাজ। সবচেয়ে খারাপ কাজ কি করেছে জানো?"

"মেয়েটাকে 10 তলা ছাদ থেকে ফালানো হয়। কেননা লাশটা আর মেয়েটার রুম টা সেখানে!"

"আমার প্রচুর রাগ যেমন হচ্ছে তেমনি আফসোস। মেয়েটাকে বাচাতে পারলাম না
"

চলবে