গল্প: হিউসেপ

ক্যাটাগরী: গোয়েন্দা থ্রিলার
লেখক: আশিকুর রহমান
পর্ব:৩

"এতে তোমার কোনো দোষ নেই। কিলারটা তোমার মাথায় বাড়ি মেরে অজ্ঞান করে দেয়। তবে একটা খারাপ সংবাদ আছে!"

" এই ভাইরাসটি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে !"

"কীভাবে ছড়ায় এটি?"

" আক্রান্ত ব্যাক্তির সংসপর্শে আসলে!"

"এটাতো তাহলে খুবই বিপদজনক!"

" হুম! তুমি ঐ মেয়ের রুম সার্চ করার সময় একটূ সাবধানতা অবলম্বন করবে।"

"সেটা বটে। আর পিন্জ সাথে থাকবে। দু-জন একসাথে কাজটি করলে সুবিধা হবে।"

" আচ্ছা! সাবধানে যেও!" ডক্টর লি একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে  ব্রডিকে বিদায় জানালো।

পরদিন সকালে ব্রডি আর পিন্জ জর্জটাউনের ঐ বাংলোটাতে খোজার জন্য যায়। এবারো হয়তো কোনো ক্লু পেতে পারে সেই জন্য।
সেই অনুযায়ি ব্রডি আর পিন্জ সেই বাংলোতে গেলো।

"পিন্জ? তুমি ঐদিকের( বেড রুম) ঘরটা চেক করো আর আমি এই দিকের (কিচেন ও ওয়াশ) রুমটা চেক করি।"

"আচ্ছা!"

প্রায় 10 মিনিট ধরে ব্রডি ওয়াশ রুমটা চেক করতে লাগলো যেখানে মেয়েটাকে মেরে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ব্রডি মেয়েটার ওয়াশ রূম চেক করার সময় আশ্চর্য হলো। "এটা কী" দেখল রাবার ব্যান্ডে কিছূ চুল লেগে আছে। মনে হচ্ছে এটা ঐ কিলারের হবে। মেয়েটাকে মারার সময় হয়তো ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়।  ব্রডি খুব সাবধানে চুলগূলো কালেক্ট করলো। ফরেনসিকে পাঠাতে হবে এই জন্য । অতপর, হঠাৎ পাশের রুম থেকে পিন্জের এক আত্মচিৎকার। ব্রডি দৌড়ে গেলো পিন্জের কাছে। আর তার কাছে গিয়ে ব্রডি যা দেখল তা রিতিমত অবাক ও শিহরিত করার মতো। ব্রডি দেখতে পেল, একটা বড় সাদা কাপড়ে মোড়ানো লাশ। তবে এই লাশটা একটা পুরুষের। পিন্জ নিচে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। হয়তো ভয়ের মাত্রাটা সে অতিরিক্ত পেয়েছে। অতপর, ব্রডি খুব দ্রুত লাশটাকে পিন্জের উপর থেকে সরালো। পিন্জ লাশটার পাশে পড়ে আছে। তবে ভয়ের বিষয়, ব্রডি যখন লাশটার দিকে তাকালো তখন সে নিজেই অজ্ঞান হওয়ার পরিস্থিতিতে ছিলো।

 ব্রডি দেখল লাশটার চোখ নেই। চোখের অংশটি রক্তে ভরে গিয়েছে। মুখের দু-পাশ কাটা। মাথার চামড়াটা কাটা হয়েছে। মগজটা একদম বাহিরে বেড়িয়ে আসার মতো। ব্রডি ধুপ করে মাটিতে বসে পড়ল। তবে অজ্ঞান হয়নি। আসলে, এমন পরিস্থিতে যেই কেউ হার্ট এটাক করবে এটা স্বাভাবিক।  কিছুক্ষন পর, ব্রডি আস্তে আস্তে উঠল। খাটের একপাশ ধরে অনেক কষ্টে দাড়িয়েছে।  অতপর, গুটি গুটি পায়ে কিচেন গেলো পানি আনতে। তার সাথে ডক্টর লি কে ফোন করল দ্রুত বাসাটায় আসার জন্য। কিচেন রুম থেকে পানি আনার পর পিন্জের মুখে পানি ছেটানো হলো। কিন্তূ পিন্জের জ্ঞান ফিরছে না বললেই চলে। ব্রঠি ভয় পেয়ে গেলো। দ্রুত পিন্জের জামা খুললো আর বুকের  মধ্যে চাপ দিতে লাগল। মুখে বাতাস দিতে লাগল। আর চোখে অনবরত পানি ছিটাচ্ছে । বেশ কিছুক্ষন পর পিন্জের চোখ খুললো।

"আমি কোথায় ব্রডি? এখানে আমরা কী করছি?" খুবই আস্তে এবং আটকে আটকে কথাটি বলল পিন্জ।

" সেটা পরে জানবে।  তুমি এখন ঠিকাছো? "

"কী হয়েছিলো আমার?"
"কিছুইনা। লাশটা দেখে জ্ঞান হারিয়েছিলে।"

হঠাৎ পিন্জ লাশটাকে দেখে আর ধুরমুচিয়ে সরে যায় আর বলতে থাকে,

"এই এই ! এটাকে সরাও আমার কাছ থেকে।"

"আহা! ভয় পাচ্ছ কেন? আমি আছি তো এটাতো  একটা  লাশই।"

"বুজছি। আমার সব মনে পড়েছে। ব্রডি! যখন আমি আলমারিটা খুললাম আর এই বিভৎস লাশটা আমার গায়ের উপর পড়লো। আর আমি তোমাকে ডাকলাম। এরপর আর কিছুই মনে নাই"

"ভয় পেয়েছো বুঝি?"

"ভয় না পেলে আমার এই অবস্থা হতো?"

"আচ্ছা যাই হোক। লাশটার মুখের অংশটা ঢেকে আমরা লাশটাকে সার্চ করি। যদি কিছূ পাই।"

"আচ্ছা! কিন্তু তুমি করো এটা। আমি করতে পারব না। ক্ষমা করো আমায়। আমি এর আগে এরকম লাশ কখনো দেখিনি। কী ধরনের সাইকো কিলার ভাবো তুমি।"

"হুম তাও ঠিক বলেছো"

অতপর ব্রডি কথা বলতে বলতে ডক্টর লি এসে হাজির।

" কী হয়েছে ইয়াংম্যান? এতো জরুরি তলব?"(ডক্টর লি)

" জরুরি তলব হবে না কেন? পিন্জের অবস্থা তো আশংকা জনক ছিলো। ভাগ্যিস ওর জ্ঞান ফিরেছে।"(ব্রডি)

" কেনো কী হয়েছে?"(ডক্টর)

" এই যে লাশটাকে শুইয়ে রাখা আছে? এটা প্রথমে আলমারিতে ছিলো আর যখন পিন্জ আলমারিটা খুলে তখনই লাশটা ওর গায়ের উপর পড়ে আর ও অজ্ঞান হয়ে পড়ে।"

" তা লাশের মুখ ঢাকা কেন" কথাটি বলতে বলতে লাশের মুখের কাপড়টা খুলেন আর জোড়ে একটা চিৎকার দেন। এবং, তিনি সাথে সাথে জ্ঞান হারান।

" ডক্টর লি একটু বেশি বুঝেন। এমনিতে আমার ভালো লাগছে না তার উপর আবার লাশের মুখ দেখতে গেলেন!"(পিন্জ)

" ওনাকে এভাবে থাকতে দাও। অজ্ঞান হয়েছে। ল্যাবে নিয়ে জ্ঞান ফিরাবো।"(ব্রডি)

" আমি বেডরুমটা সার্চ করার জন্য লাগছি। তুমি কী কিছু পেলে?"(পিন্জ)

" হুম। ছেলেদের চুলের সাইজের কিছু চুল পেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিকে পাঠাবো। হয়তো এটা খুনির হতে পারে। এর মাধ্যমে আমরা সহজেই জানতে  পারব আসল খুনির রহস্য। "(ব্রডি)

" আচ্ছা। আমি বেড রুমটা  সার্চ করে একটা কাগজ পেয়েছি। "(পিন্জ)

" কীসের কাগজ? "

চলবে