-----"ম্যাজিক বুক"-------
---"সপ্তম পর্ব"---------

আকাশে ঘণ কালো মেঘের আনাগোনা।
চাঁদের আলোয় প্রাণ নেই।
দূরে আবারও ডেকে উঠলো তক্ষক।
আবারও আছড়ে পড়লো আরেকটি গাছ।
সবাই ভীত চোখে তাকিয়ে আছে রহস্যের সমাধা জানার জন্য।

হঠাৎ তাদের সামনে বিশাল আকৃতির এক হাতির উদয় হলো।
তাদের ভয় অনেকটায় কেটে গেছে।
স্যামুয়েল উইজ যুক্তি দিলেন লাঠির মাথায় আগুন ধরিয়ে মশালের মতো করে হাতির দিকে নিয়ে গেলে হাতি পালাবে।

কথামতো কাজ করলো শাহীন।
ফলাফল স্বরুপ হাতি দৌড়ে পালালো।

অতঃপর হাতি থেকে বাঁচার জন্য তারা, তাবুর চারপাশে বিভিন্ন খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রাখলো।

সারাদিন হাঁটার জন্য সবাই ক্লান্ত।
তাই তারা তাবুর ভিতরে গেলো, ঘুম আর বিশ্রামের জন্য।
ভেতরে গিয়ে দেখলো, সৌরভের জ্ঞান ফিরেছে।
সবাই যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো সৌরভের জ্ঞান ফিরায়।
সৌরভের সাথে কথা বলে জানলো, সৌরভ অনেকটায় সুস্থ হয়ে গেছে।

সবাই নির্দিষ্ট জায়গা নিয়ে শুয়ে পড়লো।
এবং খুব শীঘ্রই সবাই গভীর ঘুমের অতলে তলিয়ে গেলো।

মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় শ্রেয়ার।
হঠাৎ তার কানে অদ্ভুত কিছু শব্দ আসতে থাকে।
মনে হচ্ছে কেউ অস্ফুটে স্বরে মন্ত্র জপ করছে।
সে কাউকে না জানিয়ে টর্চ নিয়ে বাহিরে গেলো।

শব্দটা অনেক দূর থেকে আসছে। শ্রেয়া ভয় না পেয়ে শব্দের উৎসের দিকে যেতে লাগলো।
সে রহস্য উদঘাটন করার জন্য মরিয়া হয়ে গেলো।

শ্রেয়া টর্চ হাতে এগিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে নিস্তব্ধ, কোনো শব্দ নেই; ঝিঁঝি পোকার ডাক ছাড়া।
হঠাৎ শ্রেয়া কিছু দূরে একটি উঁচু টিলা দেখতে পেলো, যার পশ্চাৎদেশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে।

সেই পাহাড়ের টিলায় ঢিপঢিপ করে জ্বলছে কিছু বাতি।
শ্রেয়া লুকিয়ে লুকিয়ে টিলার কাছে গেলো।

দেখলো, অনেকগুলো সৈন্য দাঁড়িয়ে আছে।
পোশাকে আবৃত পুরো শরীর।
দেখে বুঝা যাচ্ছে না যে, মানুষ নাকি অন্যকিছু।

হঠাৎ তিনজন মেয়েকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসলো সৈন্যরা।
তারপর, সেখানকার এক বৃদ্ধ লোকের ইশারায় তিনজনের হাত পা বেঁধে ফেললো।

সেখানকার কথোপকথন শ্রেয়ার কানে আসতে লাগলো।

"দয়াকরে আমাদের ছেড়ে দেন। আমরা তো আপনার কোনো ক্ষতি করিনি।" এক মেয়ে বললো।

"ছেড়ে দেবো? এত সহজে? তোদেরকে ফাঁসি দেওয়া হবে। তারপর যখন অমাবস্যা শুরু হবে তখন মন্ত্র পড়ে তোদের উঠানো হবে।
মন্ত্র শক্তির ফলে, মৃত্যুর পরও তোরা আমার দাসত্ব করবি। আমায় প্রভু হিসেবে মানবি।" বলেই হেসে উঠলো সেই বৃদ্ধ।

শ্রেয়ার চোখের সামনেই তিনজনের গলায় ফাঁসির রশি পড়িয়ে দিলো।
অতঃপর একজনকে ঝুলিয়ে দিলো দঁড়িতে।
কয়েক মুহুর্ত ছটফট করে  নিস্তেজ হয়ে গেলো।

এমন দৃশ্য দেখে, বাকি দুজন সেই বৃদ্ধ লোকের পা জাপটে ধরলো।
সে সঙ্গে সঙ্গে লাথি দিয়ে সরিয়ে দিলো।
আবারও আরেকজনকে ফাঁসির দঁড়িতে ঝুলানো হলো।

শেষের জন অনেক আর্তনাদ করলো বাঁচার জন্য।
কিন্তু সেই পাষণ্ড তারপরও তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিলো।
মেয়েটির চোখদুটো উল্টে গেছে ভয়ে।

শ্রেয়া মাঝরাতে এসব দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যায়।

সে দৌড়ে তাবুতে ফিরে যায়। তারপর শাহীনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বিস্তারিত খুলে বলে।

শাহীনও উৎসাহী হয়ে সেসব দেখার জন্য শ্রেয়ার সাথে সেই পাহাড়ের টিলার সামনে যায়।
ততক্ষণে অমাবস্যা শুরু হয়ে গেছে।
এখন আর কোনো সৈন্য নেই টিলায়।
শুধুমাত্র সেই বৃদ্ধলোকটি অর্ধনগ্ন হয়ে মন্ত্র জপ করছে।
হঠাৎ ফাঁসিতে ঝুলানো এক মৃতদেহ আপনা-আপনি উপরে উঠে গেলো।
তারপর ধীরে ধীরে শোয়া থেকে দাঁড়িয়ে গেলো লাশটি।

হঠাৎ করে আকাশে বিদ্যুৎ চমকালো।
বিদ্যুতের আলোয় শাহীন এবং শ্রেয়া দেখলো, সেই বৃদ্ধ আর কেউ নন বরং তাদের পরিচিত স্যামুয়েল উইজ।

তারা আর সেখানে না দাঁড়িয়ে থেকে রহস্য উদঘাটন করার জন্য তাবুর কাছে ফিরে এলো।
দেখলো, স্যামুয়েল উইজ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

দুজনের মনেই সংশয়। এটা কি ভাবে হতে পারে? স্যামুয়েল উইজ একসাথে দুই জায়গায় কিভাবে থাকতে পারে?
শাহীন এবং শ্রেয়া দুজনে বিশ্মিত হয়ে দুজনের দিকে পলকহীনভাবে তাকিয়ে আছে।
চলবে...

লেখাঃ Shourav Islam Shahin (গল্প কথক)

পর্ব এত ছোট কেনো ভাই?
তাও এতদিন পরে!